আজ || রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম :
 


সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনো মুক্তিযোদ্ধা যাচই-বাছাই কমিটির দাবি

আদালত ও জামুকার নির্দেশনা মেনে নীতিমালা অনুসারে স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে


সাতক্ষীরার আশাশুনিতে কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির দ্বার প্রভাবিত হয়ে গুটি কয়েক মুক্তিযোদ্ধা অসৎ পন্থায় তালিকা প্রণয়নের কাজে বাধার সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতলেব মিলনায়তনে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন আশাশুনি উপজেলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচই-বাছাই কমিটির নেতৃবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে আশাশুনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন জোয়াদ্দার বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ করে তাঁদের স্মার্ট কার্ড প্রদানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু আশাশুনি উপজেলার কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির দ্বার প্রভাবিত হয়ে গুটি কয়েক মুক্তিযোদ্ধা অন্যায় ও অসৎ পন্থায় তালিকা প্রণয়নের কাজে বাধার সৃষ্টি করায় উক্ত কার্যক্রম থমকে গেছে। বর্তমানের যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তারা বাধাগ্রস্থের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সফল হতে না পেরে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৪ জুন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যে ও বানোয়াট কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করে। ২০১৭ সালের ৭ সদস্য বিশিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটির দুর্ণীতির কারণে যাচাই-বাছাই স্থগিত হয়েছিল মর্মে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। আশাশুনি উপজেলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচই-বাছাই কমিটির পক্ষ থেকে তাদের ওই বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।


তিনি আরো বলেন, উচ্চ আদালতে ১৭৫১/২০১৭ নং রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে তিনটি অবজারভেশনস প্রদান করে উক্ত যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন। (১) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্রের শর্ত লংঘিত হয়েছে। (২) কমিটি গঠিত হওয়ার পূর্বে মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটির এক সদস্যের ভাতা স্থগিত হয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ মিথ্যে প্রমানিত হওয়ার পর ভাতা চালু হলেও মন্ত্রণালয় থেকে নির্দোষপত্র গ্রহণ করেনি। (৩) যাচাই-বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে জামুকায় প্রেরণ করা হয়নি মর্মে আদালতের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে। এছাড়া আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জামুকা কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্রের প্রেক্ষিতে শুধুমাত্র ‘ক’ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের কারনে ২০১৯ সালের আশাশুনির যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। কাজেই কমিটির দুর্ণীতির কারণে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত হয়নি। এবষিয়ে তারা মিথ্যেচার করেছে।
মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন জোয়াদ্দার বলেন, বিগত ২০১৭ সালে উচ্চ আদালতে দায়ের করা রিট পিটিশনে আমাকে ও আব্দুর রহমানকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলা হয়েছিল যে কারনে আদালত আমাদেরকে বিবাদী করেনি। তাদের স্ববিরোধী বক্তব্যে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এছাড়া আশাশুনি উপজেলায় কোন মুক্তিযোদ্ধা চেয়ারম্যান নেই। এটাও তাদের একটা মিথ্যেচার। তারা উচ্চ আদালতে ভূল ও মিথ্যে তথ্য উপস্থাপন করে এক পাক্ষিকভাবে একটি স্থগিত আদেশ নিতে সক্ষম হয়। কিন্তু আমরা সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেড ডিভিশনে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে তাদের সেই আদেশ রদ-রহিত করে আদালত ও জামুকার নির্দেশনা মেনে নীতিমালা অনুসারে স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। এক্ষেত্রে বাদপড়া অনেকেই সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। কিন্তু নীতিমালানুসারে তারা তালিকা প্রকাশের ১৫দিনের মধ্যে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে অনলাইনে অথবা সরাসরি আবেদন করতে পারবেন।
তিনি মুক্তিযোদ্ধা নামধারী ব্যক্তিরা যাতে তাদের হীন লিপ্সা চরিতার্থ করতে না পারে সেজন্য আশাশুনি উপজেলার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রিত হয়ে তাদরে দ্বারা সংঘটিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বর্থ বিরোধী কর্মকান্ড রুখতে হবে। একই সাথে তাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য আইনের স্মরণাপন্ন হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, শোভনারী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: আব্দুল গফ্ফার, সাতক্ষীরা জেলা সহকারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: আব্দুল করিম, কাদাকাটি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার চিত্ত রঞ্জন বিশ্বাস, বড়দল ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব মো: আকের আলী, হাতিয়াডাংগা ও কাজলনগর ক্যাম্প প্রশিক্ষক মো: জালালউদ্দীন গাজী, দর্গাপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ আরব আলী, শ্রীউলা ইউনিয়ন ডেপুটি কমান্ডার মো: আব্দুল বারী মোড়ল, খাজরা ইউনিয়ন মুক্তিাযোদ্ধা কমান্ডার মো: ,এবাদুল মোল্যা, প্রতাপনগর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: মোফাজেল হোসেন, শোভনালী ইউনিয়ন ডেপুটি কমান্ডার মো: জয়নুদ্দীন গাজী, সাবেক আশাশুনি উপজেলা ভাইচ চেয়াম্যান মো: মতিয়ার রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আকবর আলী ও মো:সোহরাব আলীসহ অর্ধশতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


Top